গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিল কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফগণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘জঙ্গিবাদে অর্থদাতা নিষিদ্ধ এনজিও চালাতেন মনিরুল!’ শিরোনামে সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ।
সংস্থাটির দাবি, সংবাদের একাংশে কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ (কেএসআর) পূর্বনাম কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটিকে (কেজেআরসি) ‘তথাকথিত জঙ্গিবাদে অর্থদাতা নিষিদ্ধ’ তকমা দিয়ে এর সঙ্গে পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম ও তার শ্যালক রেজাউল আলম শাহীনকে জড়িয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়ট ও কাল্পনিক। এর সঙ্গে সংস্থার কার্যক্রমের দূরবর্তী কোনো সম্পর্ক নেই।
এ ছাড়া কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ (কেএসআর) শুরুতেই কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটি (কেএজআরসি) নামে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং ব্যুরো থেকে নিবন্ধিত হয়, যার সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি সংস্থা ‘রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটি’র সঙ্গে দূরতম সংশ্লিষ্টতা নেই।
সংবাদে প্রকাশিত তথাকথিত ‘ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় সারির নেতা মো. জামাল আব্দুল খালেক আল নুরী’ ও তাকে গ্রেপ্তার করে মনিরুল ইসলামের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত বক্তব্যটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠাকাল থেকে অদ্যবধি ওই নামে কেউ কখনই এ সংস্থার প্রধান ছিলেন না। এমনকি এ সংস্থার এযাবৎ কালে নিয়োজিত অফিস প্রধানদের কেউই কখনও গ্রেপ্তার হননি। তা ছাড়া সংস্থার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এর নির্বাহী পরিষদ এবং নিয়োজিত জনবলের কোনো স্তরেই মনিরুল বা তার কোনো আত্নীয় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না এবং বর্তমানেও নেই। রেজাউল আলম শাহিন ২০০৫ সাল থেকে এই সংস্থার অন্যতম একজন প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টার (ঠিকাদার) হিসেবে সংস্থার বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সংস্থার নিয়ম মেনে কাজ করছেন।
এ সংস্থার কার্যক্রম বাস্তবায়নে সব সরকারের আমলেই সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সহযোগিতা অব্যাহত ছিল। উদারহরণ স্বরূপ কেএসআর ঢাকার উত্তরায় ১৯৯১-১৯৯৫ মেয়াদে তৎকালীন সরকারের বরাদ্দ দেওয়া জমিতে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল নির্মাণ করে। একই মেয়াদে সরকারের বরাদ্দ দেওয়া জমিতে বাগেরহাট, ফেনী, দিনাজপুর ও বগুড়ায় গৃহহীন মানুষের জন্য কুয়েত ভিলেজ নির্মিত হয়। ১৯৯৮ সালের বন্যায় আক্রান্ত মানুষের কাছে এ সংস্থার জরুরি ত্রাণ সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার সুবিধার্থে নিরবচ্ছিন্নভাবে দুই সপ্তাহকাল বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১১ সালে কেএসআর ঢাকার মিরপুরে সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ করা জায়গায় কুয়েতের আওক্বাফ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বিশালাকার জামে মসজিদ নির্মাণ করে। এছাড়া রাঙ্গামাটি কালেক্টরেট ভবন জামে মসজিদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদ, দোহার উপজেলা জামে সমজিদসহ এ সংস্থা কর্তৃক দেশের আনাচে-কানাচে অসংখ্য মসজিদ ও শিক্ষা অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে।
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অন্তবর্তী সরকার যখন দেশের সার্বিক সংস্কার ও ভেঙে পড়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং এর পরিপূরক হিসেবে কেএসআর দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে, ঠিক তখনই এ দেশের অন্যতম উন্নয়নসহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম দাতাদেশ কুয়েতের সঙ্গে বন্ধুত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এবং এর মাধ্যমে দেশের সংস্কার ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্থ করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আমরা আশা করছি আমাদের এই বক্তব্যের পর জনমনে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর হবে এবং তারা প্রকৃত সত্য জানতে পারবেন।